বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২২
কতদিন কতো মহামানবের পদাঘাতে ধুসর ধুলোর আস্তরণ উড়ে গেছে গোধুলীর বাতাসে,
কতদিন তারা মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলেছিলো বলে পৃথিবীর প্রাণে প্রাণ সঞ্চরণ ঘটেছিলো।
তারা জঞ্জাল কেটেছিল মাইলের পর মাইল জুড়ে,
গলিত পাথর তুলে ছুড়ে ফেলেছিল কর্ডোভার উত্তাল বুকে,
কর্ডোভা হয়েছে শান্ত আর পথ হয়েছে কন্টকমুক্ত।
ফেনায়িত সমুদ্রের বুকে পাল তুলে দিয়ে তারা ছুটে গেছে নতুন নতুন উপকূলে।
আবিষ্কারের নেশা কি'বা সম্পদ লুন্ঠনে মত্ত ছিলোনা তারা,
তারা যে ঐশী আলোটুকু পেয়েছিলো, সর্বশ্রেষ্ঠ অবলম্বন,
তা লোক-লোকারণ্যে পৌঁছে দেবার নেশা তাদের ঘুমুতে দেয়নি কখনো।
তারা জিব্রালটার প্রনালী পেরিয়ে এলো যেদিন,
মালাগার বন্দরে কোষমুক্ত ধারালো জাহাজখানা ভেড়ানোর পর তারা দেখলো,
অমার্জিত, উদ্ধত আর ভীষণ অজ্ঞ এক জনপদ সহস্রাব্দ ধরে যেন অপেক্ষায় ছিলো,
তারা অপেক্ষায় ছিলো আলোর পথযাত্রীদের জন্য।
তারা বহু শতাব্দীর নির্মম নিষ্পেষণে ছিলো জীবনবিমুখ।
সেই আলোর পথযাত্রীরা জাবাল- উত-তারিক পেরিয়ে তাদের কাছেই এলো,
নিয়ে এলো প্রাণ সঞ্জীবনী সুধা।
তারা লোহিত সাগর পাড়ি দিলো স্রষ্টায় দ্রবীভূত শান্ত আত্মা নিয়ে,
তাদের কালিমা খচিত পতাকা পতপত করে উড়ছিলো আরব সাগরের প্রমত্তা বুকে,
সূর্যের প্রখর রৌদ্রে ঝলমল করে সেই পতাকার বাণী ছড়িয়ে পড়লো সিন্ধু, কাবেরী, গঙ্গা হয়ে,
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পেরিয়ে হুয়াংহো, ইয়াংসিকিয়াং এর উপকূলবর্তী
প্রতিটি অজ্ঞাত জনপদে।
তারা কাঁটার ঝোপ, উত্তপ্ত বালুরাশি আর বরফের তীক্ষ্ণ বুকে
নগ্ন পায়ের চিহ্ন রেখে চলে গেছে
আর আমাদের জন্য রেখে গেছে মসৃণ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এক রাজপথ।
তারপর –
কতো বছর কেটে গেছে –
সেই ঐশী বাণীতে মুখরিত জনপদে আবার আসন গেড়েছে ভ্রান্তি বিলাস
আর মানবাত্মার গোপন কোঠরে সুদিনের প্রত্যাশা গুমরে গুমরে কাঁদছে।
প্রশস্ত পথখানা, পথের পাথেয়টুকু এখনও তেমনি আছে উজ্জ্বল,
পথ আজও ডেকে চলেছে বিরামহীন আলোর পথযাত্রীর উত্তরসূরীদের।
তারা কি আর আসবেনা সেই পথ ধরে?
সময় জার্নাল/আরইউ